দক্ষিণ সুনামগঞ্জে চিকিৎসক বোনের ইজ্জত বাচাঁতে বাড়ি ছাড়া নিরীহ পরিবার




 মোঃ আক্তার হোসেন

সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জে ভাইয়ের সামনে তার চিকিৎসক বোনকে জোর করে তুলে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টাসহ ছিনতাইয়ের ঘটনায় চিকিৎসক বোনের ইজ্জত বাচাঁতে সন্ত্রাসীদের ভয়ে গ্রাম ছাড়া হয়েছেন ভাই-বোন অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় গত ২৫ নভেম্বর দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন উপজেলার পূর্ববীরগাওঁ ইউনিয়নের বীরগাওঁ গ্রামের বাসিন্দা আরিফ আহমেদ হিমেল।
অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, আরিফ আহমেদ হিমেলের ছোট বোন শরিফা আক্তার একজন চিকিৎসক (ডি.এম.এফ.ঢাকা)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় বীরগাও বাজারে নিজস্ব চেম্বারে প্রতিদিন এলাকার মানুষজনের মধ্যে চিকিৎস্যা সেবা প্রদান করে আসছিলেন। শরিফা আক্তার প্রতিদিন সকাল ১০টার দিকে বাড়ি থেকে বের হয়ে তার চেম্বারে যান এবং রাত ৯টার দিকে রোগী দেখে প্রতিদিন ভাই হিমেল এর সঙ্গে বাড়িতে ফিরেন। বৈশ্বিক মহামারী করোনা ভাইরাস( কোভিড-১৯) সারা বিশে^র ন্যায় এর প্রভাব বাংলাদেশেও ছড়িয়ে পড়ে ঠিক তখনই মানব সেবার স্বার্থে শরিফা আক্তার নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে চিকিৎসা সেবা অব্যাহত রেখেছেন। প্রতিদিনের ন্যায় শরিফা বেগম ভাই হিমেলের সাথে নিয়মিত চেম্বারে যাওয়া আসা করেন। এরই মধ্যে একই এলাকার এক মাদকসেবী বখাটে একই গ্রামের মৃত. জয়নাল আবেদীনের ছেলে জুনেল আহমদ
রোগী সেঁজে চিকিৎসার নাম করে চিকিৎসক শরিফা আক্তারের ক্ষতি সাধন করার জন্য পিছু নেয়। বখাটে জুনেল প্রতিদিন যাওয়া আসার সময় চিকিৎসক শরিফা বেগমকে দেখলেই বিভিন্ন ভাবে অশ্লীল ভাষায় ও অশালীন অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে উত্যক্ত করতে থাকে।
গত ২৩ নভেম্বর সকাল ১১টার দিকে শরিফা আক্তার তার চেম্বারে যাওয়ার পথে বখাটে জুনেল তাকে একা পেয়ে শরিফা আক্তারের রাস্তা রোধ করে তার গায়ের ওড়না নিয়ে যায়। এসময় শরীফা আক্তারের চিৎকার শুনে আশপাশের মানুষ আসতে থাকলে সন্ত্রাসী জুনেল পালিয়ে যায় এবং শরিফা আক্তারকে অপহরণ করে তুলে নিয়ে ধর্ষণ করে প্রাণে হত্যার হুমকি দিয়ে যায়। সঙ্গে সঙ্গে শরিফা আক্তার তাৎক্ষনিক তার ভাই আরিফ আহমদ হিমেলকে মুঠোফোনের মাধ্যমে বিষয়টি অবগত করেন। ঘটনার দিন রাত ৯টার দিকে শরিফা আক্তারকে চেম্বার থেকে তার ভাই হিমেলকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পথে সন্ত্রাসী জুনেলের নেতৃত্বে আরও ৫জন অজ্ঞাতনামা সহযোগিরা তিনটি মোটর সাইকেলযোগে তাদের রাস্তা রোধ করে এবং ডাক্তার শরিফা বেগমকে অপহরণ করে নিয়ে যাওয়ার জন্য তার হাত ধরে টানা হেচরা শুরু করে। এসময় ভাই হিমেল বোন শরিফা আক্তারকে উদ্ধারের চেষ্টাকালে সন্ত্রাসীরা শরিফার ব্যাগে থাকা নগদ ৫হাজার টাকা, তার গলায় থাকা ৮আনা ওজনের একটি স্বর্ণের চেইন, ৬আনা ওজনের কানের দুল ছিনিয়ে নিয়ে যায়। সন্ত্রাসীরা ভাই ও বোনকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে। সন্ত্রাসীরা চিকিৎসক শরিফা আক্তারকে অপহরণ করার চেষ্টাকালে বিপরীতদিক থেকে আসা গাড়ির শব্দ শুনে পালিয়ে যায় এবং শরিফা আক্তারকে হত্যা করার হুমকি দিয়ে যায়।
শরিফা আক্তার স্থানীয় এলাকার পঞ্চায়েতদের কাছে বিচার প্রার্থী হন। কোন বিচার না পেয়ে শরিফার ভাই হিমেল দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
তাৎক্ষনিক নিবার্হী অফিসার বিষটি দ্রুত আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জকে লিখিত ভাবে সুপারিশ করেন।
কিন্ত শরিফা আক্তার ও হিমেল এর অভিযোগ থানা পুলিশ বিষটিকে কোন গুরুত্ব না দেওয়ায় সন্ত্রসীদের হুমকির মুখে পরে বোনের প্রাণ রক্ষা করার জন্য নিজের বসত বাড়ি ছেড়ে ফেরারী হয়ে ন্যায় বিচারের জন্য মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন।
এদিকে নিরাপত্তার ভয়ে শরিফা আক্তার চেম্বারেও যেতে পারছেন না । ভাইবোন পালিয়ে থেকে মানবেতন জীবন যাপন করছেন।
দ্রুত সময়ের মধ্যে সন্ত্রসীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য মাননীয় পরিকল্পনামন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করে সন্ত্রাসীদের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সু-দৃষ্টি কামনা করেন শরিফা আক্তার ও তার পরিবার।
এ বিষয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানান ওসি মোক্তাদির হোসেন জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে অভিযোগের কপিটি হাতে এসেছে। অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে পুলিশ তদন্ত করছে এবং দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার জেবুন নাহার লিখিত অভিযোগ প্রাপ্তির সত্যতা স্বীকার করে জানান, থানা পুলিশকে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।
Share on Google Plus

About alokitochattagramprotidin.com

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.