৭০০ একর বনভূমি বরাদ্দের প্রতিবাদে রামুতে মানববন্ধন




প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
কক্সবাজারের ঝিলংজা মৌজার শুকনাছড়িতে বন বিভাগের জমি বিসিএস প্রশাসন একাডেমিকে বরাদ্দ বাতিল করে অন্য কোথাও স্থানান্তরের জন্য আহবান জানিয়েছেন কক্সবাজারের নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিবৃন্দ।

শুকনাছড়িতে বন বিভাগের জায়গা ভূমি মন্ত্রণালয় কতৃক বরাদ্দ দেওয়ার প্রতিবাদে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন চত্বরে অনুষ্ঠিত নাগরিক মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় এ কথা বলেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয় জনগোষ্ঠী।

 সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট, হিউম্যান রাইটস এন্ড ডেভেলপমেন্ট ফোরাম- সিইএইচআরডিএফ, একলাব, অর্ণব কক্সবাজার ও জেলা উপকূলীয় পল্লী উন্নয়ন পরিষদ এর আয়োজনের এ মানববন্ধনে পরিবেশ, ইকোসিস্টেম, জীবন ও জীবিকা রক্ষায় সরকারের সুবিবেচনার জন্য  এবং  করণীয় বিষয়ে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

সিইএইচআরডিএফ'র প্রধান নির্বাহী মোঃ ইলিয়াছ মিয়া'র  সভাপতিত্বে এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন রামু লেখক ফোরাম সভাপতি হাফেজ আবুল মনজুর ও রামু নিউজ সম্পাদক সাংবাদিক শোয়েব সাঈদ।   

স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিইএইচআরডিএফ রামু সার্কেল এর ডেপুটি কো-অর্ডিনেটর রিয়াজ উদ্দিন বাপ্পী। 

সিইএইচআরডিএফ রামু ফোরাম সমন্বয়ক রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় এতে বক্তব্য রাখেন সিইএইচআরডিএফ এর সহযোগী জনশক্তি সমন্বয়ক রেজাউল হায়াত রেজা, ইকোসিস্টেম কনজারভেশন গ্রুপ সমন্বয়ক মুরশেদ আলম, জোয়ারিয়ানালা ফোরাম সমন্বয়ক মোহাম্মদ রাসেল, রামু ফোরাম সহ-সমন্বয়ক তানভীর ইসলাম অভি প্রমুখ। 

বক্তারা বলেন, কক্সবাজার বাংলাদেশের সর্বদক্ষিণের একটি প্রাকৃতিক ব্যুহ। কক্সবাজারের পাহাড়গুলো প্রাকৃতিক দূর্যোগের জন্য বাধা হিসেবে কাজ করে। শুকনাছড়ির পাহাড় তেমনই বন। এটি বন বিভাগের জমি। সে বন বরাদ্দ দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

তারা আরো বলেন,  কক্সবাজার মেরিন ড্রাইভের পাশে ওই বনভূমি ‘রক্ষিত ও পরিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন’।১৯৩৫ সালে ব্রিটিশ সরকার একে রক্ষিত বন ঘোষণা করে। বন বিভাগ এত বছর ধরে এটি রক্ষণাবেক্ষণ করছে। বিপন্ন এশীয় বন্য হাতিসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ বন্য প্রাণীর নিরাপদ বসতি এই ঝিলংজা বনভূমি। বন আইন অনুযায়ী, পাহাড় ও ছড়াসমৃদ্ধ এই বনভূমির ইজারা দেওয়া বা না দেওয়ার এখতিয়ার কেবল বন বিভাগের।

তারা বলেন,  কিন্তু সাম্প্রতিক রোহিঙ্গা সংকট ও জনঘনত্বের বাড়ার ফলে কক্সবাজার প্রতিবেশ সংকটে পড়েছে। প্রায় দেড় হাজার একরের পাহাড় ও ভূমি আবাসস্থল হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে।

পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, প্রতিবেশগতভাবে সংকটাপন্ন এ বনভূমিতে কোনো ধরনের স্থাপনা নির্মাণ করা নিষেধ। এ কারণে বন বিভাগ থেকে ‘এই ভূমি বন্দোবস্তযোগ্য নয়’ উল্লেখ করে বিভিন্ন দপ্তরে চিঠি দেওয়া হয়।

স্থানীয় নেতারা বলেন, আমরা ২৫ বছর আগে উদ্বাস্তু হয়ে এ জায়গায় আশ্রয় পেয়েছি। প্রকৃতি ও পরিবেশ এর সাথে আমরা সহাবস্থান করে চলছি। আমাদের আবারো বিতাড়িত করলে আমাদের যাওয়ার আর জায়গা নাই। 

বক্তারা বলেন, চলমান জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় সারাবিশ্বের  কর্মসূচির অংশ হিসেবে এখন রিস্টোরেশন এর সময়। প্রাণ ও প্রজাতি রক্ষায় জীববৈচিত্র্যের  সংরক্ষণ সময়ের দাবী। নইলে মানবজাতির বিলুপ্তি অবশ্যাম্ভবী। এ সময় এটি দুঃখজনক। বক্তারা অবিলম্বে এই বরাদ্দ বাতিলের জন্য আহবান জানান। 

সভায় উপস্থিত ছিলেন সিইএইচআরডিএফ রামু ফোরাম, জোয়ারিয়ানালা ফোরাম, ফতেখারকুল ফোরামের সদস্যবৃন্দ।
Share on Google Plus

About alokitochattagramprotidin.com

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.