ঘরে বসেই টিকিট কাটা যাবে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার



তীব্র শীত কিংবা প্রখর সূর্যের নিচে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটার দিন শেষ হল চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার। প্রথমবারের মতো চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ চালু করেছে ই-টিকিট সেবা। ফলে বাঘ-সিংহ কিংবা প্রাণী দেখতে আসা দর্শনার্থীরা এখন থেকে ঘরে বসেই সহজে অনলাইনের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে পারবে প্রবেশের টিকিট।

সোমবার ই-টিকিট কার্যক্রম উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার নির্বাহী কমিটির সভাপতি মোহাম্মদ মমিনুর রহমান।

সংশ্লিষ্টরা জানান, নগরীর খুলশী ফয়’স লেক সংলগ্নে থাকা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় এতদিন দর্শনার্থীদের দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে কাটতে হতো প্রবেশের টিকিট। লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট কাটতে গেলে দীর্ঘ অপেক্ষাও করতে হতো দর্শনার্থীদের। তবে ই-টিকিট কার্যক্রম চালু হওয়ায় ফলে ঘরে বসে সহজেই সবাই প্রবেশের টিকিট সংগ্রহ করতে পারবেন। এ জন্য চিড়িয়াখানার ওয়েব সাইটে প্রবেশ করে সহজেই যে কেউই টিকিট সংগ্রহ করতে পারবে।

এদিকে, গত ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় রাজ-পরী বাঘ দম্পতির ঘরে জন্ম নেয়া চার সাদা বাঘ শাবক (পদ্মা, মেঘনা, সাঙ্গু এবং হালদা) দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানার বাঘের খাঁচার অভ্যন্তরে চার বাঘ শাবককে নিজ হাতে ছেড়ে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করেন মোহাম্মদ মমিনুর রহমান। এ সময় উপস্থিত ছিলেন চিড়িয়াখানার নির্বাহী কমিটির সদস্য এনডিসি তৌহিদুল ইসলাম, চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ প্রমুখ।

এছাড়া প্রতিষ্ঠার ৩৩ বছর পর চিড়িয়াখানার কর্মকর্তা কর্মচারীদের বহুল প্রত্যাশিত প্রভিডেন্ট ফান্ডও চালু করা হয়। একইসঙ্গে চিড়িয়াখানার প্রাণী পরিবহনসহ বিভিন্ন কাজের জন্য একটি পিকআপ হস্তান্তর করেন জেলা প্রশাসক।

বাঘ শাবক দর্শনার্থীদের জন্য উম্মুক্ত করার সময় সংক্ষিপ্ত এক বক্তব্যে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, বাংলাদেশে এর আগে কোনো চিড়িয়াখানায় এক সাথে এতোগুলো সাদা বাঘের জন্ম হয়নি। চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা ছাড়া দেশের কোনো চিড়িয়াখানায় এক সাথে এতোগুলো সাদা বাঘ নেইও। গত ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় জন্ম নেয়া এ বাঘগুলোকে জঙ্গল সলিমপুরে যে ‘নাইট সাফারি পার্ক’ তৈরি হচ্ছে সেখানে ছেড়ে দেয়া হবে। আশা করছি আগামী দুই বছরের মধ্যে বাংলাদেশের দর্শনার্থীর জন্য পরিপূর্ণ একটি নাইট সাফারি পার্ক উপহার দিতে পারবো।

তিনি বলেন, আগামী সপ্তাহ-দশ দিনের মধ্যে জঙ্গল সলিমপুরে নাইট সাফারি পার্ক তৈরির জন্য জায়গা নির্ধারণের কাজ শেষ হবে। আপাততঃ ৬ একর জায়গার মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে।

তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যে আমরা নাইট সাফারি পার্কের জন্য সিংহ, জলহস্তি, উট, ম্যাকাও, জিরাফ, ক্যাঙ্গারু, বিপন্ন এশিয়ান হাতিসহ আট প্রজাতির প্রাণীর জন্য আবেদন করেছি। যেগুলো আগামী দু’মাসের মধ্যে আসবে। এছাড়া বিভিন্ন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ করা হবে এখানে।

চিড়িয়াখানার ডেপুটি কিউরেটর ডা. শাহাদাত হোসেন শুভ চিড়িয়াখানার ৩৩ বছর পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য তাদের দাবিকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড চালু করায় কর্তৃপক্ষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। ডা. শুভ জানান, দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা বাঘের মধ্যে তিনটি পুরুষ ও একটি মহিলা শাবক।

Share on Google Plus

About alokitochattagramprotidin.com

This is a short description in the author block about the author. You edit it by entering text in the "Biographical Info" field in the user admin panel.